বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৫

বিচিত্র সমাজি পতিতা তৈরির কারখানা।




বড়ই বিচিত্র আমাদের এই সভ্য সমাজ। আমাদের চোখের আড়ালে কি ঘটে চলছে তা নিয়ে হয়তো আপনাদের ধারণা খুবই কম। পাঠক আজ আপনাদের কাছে সভ্য সমাজের একটি ঘটনা তুলে ধরবো।

রাত তখন দশটা বিশ মিনিট। ফুটপাতের হোটেলের কাঠের চেয়ারে বসে আছি দুই বন্ধু। আমি আর নাসির। বসে চা, আর মোগলাই পরটা খেয়ে নাসির একটা সিগারেটে আগুন ধরিয়ে টানতে লাগলো।

সিগারেটের ধোয়ায় কুন্ডলী পাকিয়ে আশপাশটা ভরে গেল। আর দুষিত বায়ুতে নিঃশ্বাস টানতে হচ্ছে দেখে খুব বিরক্ত লাগলো। কেন যে মানুষ সিগারেট খায়? অযথাই কেন যে আশপাশের পরিবেশটাকে দূষিত করে? বোকা লোকগুলো এর মাঝে কি সুখ খুজে পায় আমার বুঝে আসেনা।

কিছুক্ষন আড্ডা দেয়ার পর দুই বন্ধু একসাথে বাড়ির উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলাম রাত তখন দ্বিপ্রহর। ঘন্টার কাটা বারোটা ছুই ছুই আকাশে ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদ। ছেড়া মেঘের ফাক ফোকর গুলিয়ে মরা জ্যোসনা এই মধ্যরাতের প্রকৃতিকে বড় অচেনা করে আনে। জলসিক্ত হাসনা হেনার গন্ধ মাদকতা ছড়ায়।

এলোমেলো ভাবতে ভাবতেই হাটতে লাগলাম। বন্ধু নাসির, চলে গেল তার বাড়ির পথটি ধরে। চারদিক তখন একেবারে নিরব নিস্তব্দ পুরো শহর তখন গভীর ঘুমে মগ্ন। দূরে নিম গাছে একটি কুক পাখি ডেকে চলছে অবিরাম। কুক পাখির ডাকটাই যেন কেমন! শুনলে গা ছম ছম করে উঠে! কেমন যেন একটা বিষাদ ও বিরহী ভাব ডাকটার মধ্যে। সেই ডাক এই শীতের রাতের নিঃস্তব্দতাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

আমার হাতে একটি চার্জলাইট। বড় রাস্তা ছেড়ে যখন ছোট রাস্তায় পায়ে হেটে চলছি। হঠাৎ করেই হাটা থামিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম! মনে হল, রাস্তার একটু দূরেই কদম গাছের নিচের ঝোপ-ঝাড় গুলো বড় বেশী নড়া-চড়া করছে! একটু ভয় নিয়ে আস্তে করে এগিয়ে গেলাম। তারপর চার্জলাইটের আলো ফেলতেই একটা তরুন দেহের মত একজন মধ্যবয়সী লোক হাঁজার মাইল বেগে ছুটে পালালো। আরো একটু এগিয়ে লাইটের আলো ফেলে দেখলাম!

নাভীর উপরের অংশে কাপড় ছাড়া একটা নারীদেহ মুখে হাত দিয়ে দুই চোখ ডেকে চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। তার ভরাট দেহ যেন বর্ষার নদীর ঢেউয়ের মত ফুলে ফুলে উঠছে! চোঁখ টা সরিয়ে নিলাম। কি বলবো তাকে ঠিক বুঝে উঠছিলাম না। জোরে ধমক দিলাম! এই মেয়ে তুমি কে? কিছু বুঝে উঠার আগেই নারী দেহটি ডাইব দিয়ে দুই পা জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠল।

ভাইজান, আপনার আল্লাহর দোয়াই আমারে এই শহরের পতিতা বানাবেন না। আমার কোন দোষ নাই। আবার ধমক দিলাম, চুপ করো কাপড় পরে নাও তারপর কি হয়েছে বলো? মেয়েটি পা ছেড়ে পাশের ঝোপের আড়াল থেকে শাড়ি নামক এক বস্তু গায়ে জড়িয়ে এলো যা তার রঙ হাঁরিয়েছে অনেক আগে। শাড়িতে কয়েকটি তালি লাগানোর পরেও মেয়েটির দেহ ঢাকতে ব্যর্থ হয়েছে।

এরপর ফুফিয়ে ফুফিয়ে মাথা নিচু করে এসে সামনে দাঁড়াল। তাকিয়ে দেখলাম, বয়সে আমার থেকে অনেক বড় হবে তাই এবার আপনি করেই বললাম। সে মাথা নিচু করেই বলতে লাগলো। সে পাশের বাড়ির মৃত বদর আলীর ছেলে সিরাজের স্ত্রী। তার স্বামী বিদেশে কি এক কারখানায় নাকি চাকরি করে। আগে বছর খানেক পর পর বাড়ি আসত, কাপড় নিয়ে টাকা নিয়ে। কিছুদিন থাকত তাকে আদর সোহাগ করে আবার চলে যেত। দুই বছর হয়ে গেল সিরাজ আর আসেনা। ওখানে সে আরেকটা বিয়ে করেছে এখন সে আর আসবে না। সে গৃহস্থ বাড়িতে কাজ করে।

অনেক যুবক এমনকি বয়স্ক বৃদ্ধরাও তাকে কুকামের প্রস্তাব দেয়। সে কোনোদিন রাজি হয়নি। অনেকবার ভেবেছে এই শহর ছেড়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে যাবে সে। কিন্তু ঘরে অসুস্থ শ্বাশুড়িকে রেখে কিভাবে যাই ? একটি মায়া স্বরেই বলল সে।

আমি অবাক হলাম! যে স্বামী তার খোজ খবর না নিয়ে আরেকটা বিয়ে করে সুখে থাকতে পারে অথচ তারি বৃদ্ধ অসুস্থ মায়ের দায়িত্বভার বহন করছে সে। আমি অবাক দৃষ্টিতে শুনতে লাগলাম তার কথাগুলো। প্রতিদিন একবেলা খেয়ে দিন কাটায় তাও আবার জোটেনা ঠিকভাবে। না খেয়ে ঘরে বসে থাকে সে। বাহিরে বেরুলেই তার জন্য খারাপ প্রস্তাব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে অনেকেই। সে আর যায়না কাজে। নিজে না হয় না খেয়ে মরে যাব তাতে দুঃখ নেই কিন্তু বৃদ্ধ শ্বাশুড়ি ক্ষিদের জ্বালায় যখন চটপট করে তখন আর সহ্য হয়না।

সবাই তাকে শাড়ি, টাকার লোভ দেখায়। কাপড়ের অভাবে অন্য কোথাও কাজের জন্য যেতে পারিনা। তাই শ্বাশুড়ির চিৎকারে আজ এই লোকটির কথায়… বলতে গিয়ে………..আবার কেঁদে উঠলো।

এবার আর ধমক দিলাম না! কাছে গিয়ে আস্তে তার মাথায় হাত রাখলাম। মেয়েটি ভয়ে ভয়ে মাথাটা সোজা করলো। তার ঠোট দু টো মাছির পাখার মত কাপছে ভয় আর লজ্জায় মেয়েটি একখন আর কথা বলতে পারছে না। আমি বললাম, আপনি কোন চিন্তা করবেন না। এ কথা আমি কাউকে জানাবো না। কথাটি শুনে মেয়েটা একটা নিঃশ্বাস ছাড়ল। মনে হল, হয়তো বুকের উপর চাপানো একটন ওজনের একটা পাথর এইমাত্র সরে গেল।

জিজ্ঞেস করলাম আপনার নাম কি? খুব বিরক্ত আর তাচ্ছিল্ল স্বরে উত্তর দিল। আমি বললাম, চিন্তা করবেন না। এখন আপনি যান। ছিড়া, তালিযুক্ত কাপড়টাকে কোন মতে গায়ে জড়িয়ে  ক্লান্ত দেহটা বয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল মেয়েটি।

আমি তবুও দাঁড়িয়ে আছি-ভাবছি নিজেকে ভীষন অপরাধী মনে হল, আমি অসাধারন কেউ নই। সমাজ সংস্কারক ও নই, অতি তুচ্ছ একজন মানূষ তবুও মনের পর্দায় জেগে উঠলো, জীবনে দেখা অনেক মহিলার কথা। যাদের কাছে শাড়ি লজ্জা নিবারনের জন্য কোন মূল্যবান বস্তু নয়। শাড়ি তাদের জন্য ফ্যাশন। টিভির পর্দায়, খবরের কাগজে, মানুষের মাঝে নিজেকে আকর্ষন করে তোলার এক উপদ্রব।

কোন এক বিশেষ দিনে নিজেকে বিকশিত করে তোলার এক আবরন। আলমারীতে শোভা করে রাখা এক অহংকার। তাই আজ মনে পড়ল সেই সব শাড়ি পরিহিতাদের কথা যাদের নামি-দামী বর্ণাঢ্য শাড়ির ঝলকানিতে চোঁখ ঝলসে গিয়েছে কিন্তু পানি আসেনি। অথচ আজ এই চেড়া-তালিযুক্ত আশি, নব্বই টাকার অতিসাধারন একটি শাড়ি, তা দেখে চোঁখে পানি চলে আসলো, কেন জানিনা।
লেখাঃ এ.কে. আবু রুবাইয়া।
সাহায্যেঃ অশান্ত ছেলেবেলা।
প্রকাশ্যেঃ গুগল, ফেসবুক, টুইটার। 
শুশিল এই সমাজ পতিতাদের ঘৃণা ছাড়া আর কি দিয়েছে? 

মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫

এরা কেন পতিতা হয়?



২০১২ সালের জানুয়ারীর প্রথম দিকে আমি কৌতুহল বসত এক পতিতালয়ে গিয়েছিলাম। মুখে মুখে শুনতাম জায়গাটা অনেক খারাপ। এখানে নাকি দেহ বিক্রি হয়। তারপর ও জায়গাটা সম্পর্কে জানার জন্য আমি সেখানে যাই।

ওখানে যাবার সময় অনেক ভয় হচ্ছিল কিন্তু ভিতরে গিয়ে দেখি অনেক মেয়েরা তাদের দেহটাকে ভোগ করার জন্য বিভিন্ন সাজে সজ্জিত ছিল। হঠাৎ আমার চোখে একটা মেয়েকে অনেক ভাল লেগে যায়। তার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু তাদের সাথে নাকি কথা বলা নিষেধ, কারণ তারা নাকি খুবই খারাপ।

অনেক চেষ্টা করে মেয়েটার সাথে কথা বলার সুযোগ হয়। আমি মেয়েটাকে বললাম আমি কি আপনার সাথে একটু কথা বলতে পারি? মেয়েটা কোন উত্তর দেয় নি। আবার বললাম যদি কিছু মনে না করেন আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাই। মেয়েটা তখন আমাকে বলল কি বলবা বল।

"আমার আগে থেকেই জানার ইচ্ছে ছিল তারা এখানে আসে কিভাবে?" ওনাকে বললাম আপনি এখানে কিভাবে আসলেন, বলবেন কি? ওনি বলল তুমি আসছ কি জন্য? তুমি কে, তুমার জানার কি দরকার? 

কথাটা বলে সে কেঁদে দিল, আমি বললাম কাঁদছেন কেন? তারপর সে বলল- I am not a prostitute. আমি অবাক হলাম তার ইংরেজিতে কথা বলা শুনে। সে বলল, আমি English Medium এর ছাত্রী।  আমি একটা ছেলেকে ভালবাসতাম। ছেলেটা আমার জন্য অনেক কিছু করতে চেয়েছিল বলে আমি জানতাম। কিন্তু প্রেমের নামে সে আমাকে ধোকা দিয়েছে। 

আমার বাবা একজন বড় ব্যবসায়ি ব্যক্তি। আমি সবার অজান্তে এক সময় ছেলেটাকে বিয়ে করি। বিয়ের পর সে আমাকে নিয়ে বেরাতে নিয়ে গিয়ে আমাকে একটা লোক এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।

সেদিন সন্ধার পর আমি তাকে আর খুজে পায়নি। আমার সাথে সে দেখা না করে আমাকে রেখে চলে আসে। তারপর থেকেই আমি এখানে (পতিতালয়)।’ আমি বললাম, আপনি এখান থেকে চলে যাচ্ছেন না কেন? আপনার বাবার সাথে যোগাযোগ করেননি? 

সে বলল, কোন মুখে আমি বাবার কাছে যাব? প্রেম বা বিয়ে কোন সময়ত আর উনাকে জিজ্ঞেস করি নাই। আমি বললাম, আমি আপনাকে এখান থেকে নিয়ে যাবার বেবস্থা করব আপনি যাবেন? সে বলল, সবাই বলে যখন বলি আমার পরিচয় কি হবে? তারপর কেউ কোন কথা বলে না। মুখে অনেক কথা বলা যায় কিন্তু তা করা যায় না। তুমি পারবে আমার একটা পরিচয় দিতে? 

আমার আর কথা বলার মুখ রইল না। আমি ফোন বের করে তাকে বললাম আমার একটা কল আসছে আমি আসি। তখন সে হাঁসতে শুরু করল। আমাকে যতখন দেখা গেল ততখন সে হেঁসে গেল। তার অনেক দিন পর শুনলাম সে নাকি সোসাইড করেছে!
লেখাঃ এ.কে. আবু রুবাইয়া।
সাহায্যেঃ অশান্ত ছেলেবেলা।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।
সমাজে প্রতিটি মানুষই গুরুত্বপূর্ণ, হোক সে পতিতা কিংবা প্রতিবন্ধী। 

পতিতা এবং আমি।



দরজাটা হালকা শব্দ করে লাগিয়ে মেয়েটির পাশে গিয়ে বসলাম, মেয়ে বলব না যুবতি ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না, হতে পারে যুবতি অথবা মহিলা। কথা বলা দরকার, রুম এ আমি আর সে ছাড়া কেউ নেই।  কখনো একটা মেয়ের সামনে একা বসিনি তাই প্রচন্ড নার্ভাস ফিল করছিলাম।  যাই হোক চুপ থাকলাম না, নিজ থেকেই শুরু করলাম। 

★-আপনার নাম কি ?
★-নাম শুনে কাম শুরু করবেন? 
★-হ্যাঁ, কেনো সবাই করে নাকি ?
★-না কিন্তু অনেক লোকেই জিগায়। 
★-ও আচ্ছা, এবার আপনার নাম বলুন? 
★-বন্যা (আমার প্রিয় নাম) 
★-আচ্ছা আপনার বয়স কতো হবে?
★- এই যে ধরেন ১৭, আপনার কি এটা প্রথম ?
★-বেশ ঠান্ডা ভাবেই বললাম হ্যাঁ, আমার প্রথম। 

(বুঝলাম মেয়েটি বয়সে কিশোরী তাই আপনি থেকে তুমিতেই আসলাম।)
  • বন্যা:- তো আপনি শুরু করবেন নাকি আমি করবো?
  • আমি:- সবই করবো কিন্তু আগে আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দাও, তুমি এই বাবসায় কতদিন আছো ?
  • বন্যা:- কেনো হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন?
  • আমি:- আমার জানতে ইচ্ছা তাই। 
  • বন্যা:- যাইনা কি করবেন সারা রাইত তো এই শরীরটা নিয়াই থাকবেন, সকাল হইলে তো আর বিয়ে করবেন না। 
  • আমি:- তুমি যা ভাবছো আমি তেমন কিছুই করবো না।
  • বন্যা:- তাহলে কি করতে এসেছেন আপনি?
  • আমি:- তোমার সম্পর্কে কিছু জানতে চাই।
  • বন্যা:- আগে বলেন আপনার নাম কি?
  • আমি:- সরল ভাবেই বললাম বিপুল। 
  • বন্যা:- কি করেন, পড়াশোনা?
  • আমি:- হ্যাঁ। 
  • বন্যা:- এখানে কে পাঠাইছে?
  • আমি:- কেউ না, তোমার প্রশ্ন শেষ ?
  • বন্যা:- হ্যাঁ।
  • আমি:- আচ্ছা তাহলে এইবার বলো তুমি কতদিন এখানে আছো?
  • বন্যা:- প্রায় ৮ মাস। 
  • আমি:- কিভাবে আসলে এখানে ?
  • বন্যা:- চুপ করে গেলো, অনেক শব্দ করে কেঁদে উঠলো, শুনবেন আমার এখানে আসার
  • কাহিনী ?
  • আমি:- আস্তে করে বললাম, "বলো"।
  • বন্যা:- আমি গ্রামে থাকতাম, 

খুব ভালো অংক করতাম, স্যাররা সবাই আমাকে পছন্দ করতো, কিন্তু আমার পরিবার ভালো ছিলোনা, পরিবার বলতে আমি, আমার মা, বাবা আর আমার ছোটো বোন। বাবা মাঠে কাজ করতেন, একদিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরেছি, বাসায় দেখলাম এক অচেনা লোক, মা বললেন ইনি তোর মামা, তোকে পড়াতে গ্রামের বাইরে নিয়ে যাবে, আমি কিছুই বললাম না।  
তখন আমি ক্লাস ৯ এ পড়ি, বন্ধুদের থেকে দূরে থাকবো, বাবা মা এমন কি আদরের ছোটো বোনটা কে ও দেখবো না ভেবেই অনেক কান্না পেলো। 
                           তারপর ২ দিন পর বাবা নিজ হাতে ওই লোকটির সাথে আমায় গাড়িতে দিয়ে আসলেন, আমি গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়ি।  হঠাৎ করেই গুম ভাঙ্গে, এখনো ও গাড়িতেই আমি, লোকটা আমাকে একটা জুস দেয় বললো জুসটা খেতে, আমিও খেয়ে নেই। আবার গুম আসে ঘুমিয়ে পড়ি, গুম ভাঙলো চোখে পানির ঝাঁপটা খেয়ে, সামনে দেখি একটা মহিলা আর ঐ লোকটা।

  • -মহিলা হেসে বলে, ফারুক মালটা তো কচি, কই থেইকা পাইছস? 
  • -আফা কইয়েন না, অর আব্বাই অরে বেইচা দিছে। তয় আপনার ভাণ্ডারে এইবার ঝাক্কাস মাল পাইছেন।
  • -খুশি কইরা দিলিরে ফারুক খুশি কইরা দিলি।


তারপর ঐ মহিলা আমার গালে হাত দেয় বলে, আগে করছস ? আমি বোকার মতো বললাম কি ? তারা দুজনেই জোরে হাসি দেয়, শয়তানের হাসি। এতক্ষণ চুপ করে থাকলাম, হয়তো নিজের কান কে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছিল তারপর ও করলাম। 

(অনেক প্রশ্ন করার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু শুধু একটা কথাই বললাম) 

★-তারপর? 
মেয়েটির চোখের পানি পড়েই চলছে, থামবার নয়, সে আবার বলা শুরু করলো, প্রথমে বুঝে উঠতে পারিনি কি করবো, হঠাৎ একদিন রুমে বসে আছি, গ্রাম থেকে আনা বই গুলো পড়ছি, দরজা খোলার শব্দ পেলাম, একটা ছেলে আসলো, বয়স ২২ কিংবা ২৩ হবে, এসেই আপনার মতো নাম জানতে চাইল, আমি নাম বললাম। 

-হঠাৎ করেই সে আমার ঘাড়ে হাত রাখলো, তারপর হাতটা চলে গেলো বুকে, আমি অনেক জোরে একটা চড় লাগাই, হয়তো এটাই ছিলো আমার ভুল, সে চলে যায়, একটু পরেই ঐ মহিলা আসে আমায় অনেক মারধোর করে, আমার সব কাপড় খুলে নিয়ে যায়, তারপর ঐ ছেলে আবার আসে, জানি না কতক্ষণ আমার ওপর ঐ অত্যাচার চলে আমি শুধু কাঁদতে থাকি, তারপর আরো ৩ জন আসে। আমি অজ্ঞান হই শেষ পর্যন্ত।

তারপর থেকেই এই নতুন জীবন শুরু, ২ দিন পর পর কতো লোক আসে , কতো রকমের, কেউ এসে ভালো আচরন করে আর কেউ আশে শুধু ক্ষুদা মেটাতে। মেয়েটির চোখ মুখ এইবার শক্ত হয়ে উঠে।

(৫ মিনিট দুজনেই চুপ থাকি) তারপর,
আমি:- বাড়ি যেতে ইচ্ছে হয়? তোমার বাবা মার কাছে যাবে?
বন্যা:- না, আমার কোনও বাড়ি নেই, বাবা মা ও নেই, যারা শুধু টাকাই চিনে তারা কিসের বাবা-মা? শুধু একবার ছোটো বোনটা দেখতে ইচ্ছে হয়।

আসলেই এই প্রশ্নটা আমারই ভুল, ওর তো কোনও পরিবার নেই, থাকলে হয়তো এখন ও বাসায় থাকতো, পড়তো, খেলতো আরো অনেক কিছু করতো।  যারা শুধু অর্থের লোভের মাঝেই থাকে তাদের কোনও অধিকার নেই পিতা মাতা হবার।

মেয়েটি এবার বললো, আপনি কি আমার একটা উপকার করতে পারবেন, আমি বললাম কি ? আপনাকে তো বলেছি আমার একটা ছোটো বোন আছে, কে জানে যদি ওকে ও আমার মতো, বলেই আবার ও কেঁদে উঠে।

আমি কথা দিলাম সাধ্যের বাইরে ও চেষ্টা করবো। তারপর আমার ফোন নাম্বার দিলাম এবং এটা ও বললাম কখন এই যায়গা ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করলে নিচের নাম্বারে যাতে ফোন দেয়, আমি উঠে চলে আসব ঠিক তখনই মেয়েটি উঠে দাঁড়ায়। "ভাইয়া একটু দাঁড়ান, বলেই আমার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে, কান্না ভরা চোখে একটা ছোট্ট হাসি দেয়"

চলে আসি, ভাবতে থাকি হয়তো আমাদের সমাজ এর কথা। যেখানে আছে, কিছু পশুর বাস। চাহিদা মেটাতে হয়তো নিজের মেয়ে, বোন এর সমান মেয়ের অপর ও ঝাঁপিয়ে পড়তে কোন সংকোচ বোধ করে না। থাক আর ভেবে কাজ নেই, অনেক কাজ বাকি। যেতে হবে অনেক দূরে, মেয়েটির গ্রামে বাঁচাতে হবে ওর ছোটো বোন কে।
লেখাঃ আবু রুবাইয়া।
সাহায্যেঃ অশান্ত ছেলেবেলা।
প্রকাশ্যেঃ ইন্টারনেট।
তথ্যসূত্রঃ অজানা।
জীবনের দামে কেন জীবিকা? 

সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৫

একজন মায়ের পতিতা হওয়ার বাস্তব কাহিনী।


সেদিন, সারাদিন বিষন্ন আর একা কাটিয়ে সন্ধ্যার দিকে বেড়াতে বের হলাম। টিএসসি তে বেশ কিছুক্ষণ বসে থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে ঘুরতে বের হলাম। উদ্যানে অনেকক্ষণ যাবৎ বসে আছি। 
                 আকাশের অসীমতা খোঁজার চেষ্টা করছিলাম বোধহয়। হঠাৎ আবছা আলোতে দেখি, একজন মধ্যবয়স্কা নারী আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি কিছুটা বিস্মিত হলাম। এত রাতে এরকম আবছা-আলো আধাঁরে এরকম এক নির্জন স্থানে নারীটি কি করছে! পরমূহুর্তে মনে হল হয়ত উনি এখান দিয়ে যাতায়াত করেন। চোখ সরিয়ে আবার আকাশে রাখলাম। এমন সময় উনি আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লেন। আমি কিংকর্তব্যবিমুড় হয়ে বসে রইলাম। কি চায় এই নারী?

উনিই প্রথমে আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, কিছু করাবেন ভাইয়া? কিছু না বুঝতে পেরে আমি উনার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। উনি প্রশ্নটি আবার করলেন। এবার আমি বললাম, দুঃখিত আমি বুঝতে পারছি না, আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন? উনি কিছুটা মুচকি হেসে বললেন সত্যি, আপনে বুঝেন নাই? আমি মাথা নাড়লাম। এরপরে উনি যে বাক্য বিনিময়ে আমাকে বুঝিয়ে দিলেন তা আমি এখানে লিখতে পারব না। আমি বুঝতে পারলাম উনি একজন পতিতা এবং আমার কাছে কেন এসেছেন।

আমি উনাকে বললাম দেখুন, আমি ওরকম কোন উদ্দেশ্যে এখানে বসে নেই। সুতরাং আপনি যেতে পারেন। এবার উনি জোড় করলেন, দেখেন আজ কোন কাস্টমার নাই। আমি জানি, আপনি ক্যান বসে আছেন। চলেন। এবার আমি কিছুটা রেগে গেলাম। রেগে গিয়ে কিছু একটা বলব তার আগেই নিজেকে শান্ত করে বললাম, আচ্ছা, আপনি কত টাকা চার্জ করেন? উনি এমাউন্টটা জানালেন। 

অনেকক্ষণ একাতীত্বের দ্বারা গ্রাস হওয়ার কারণে কিছুটা সঙ্গ লাভের কামনায় আমি উনাকে বললাম, আচ্ছা আমি ওরকম কিছু করব না। তবে আপনার সাথে বসে গল্প করব বসেন। আমাকে সম্পুর্ণ অবাক করে দিয়ে উনি হাসিমুখে বসে পড়লেন।

উনি বললেন,  বলেন কি গল্প বলবেন? আমি বললাম, আপনি কিভাবে এ পথে আসলেন? (স্বভাবতই এই প্রশ্ন করা। আমার ধারণামতে পতিতাদের সাথে সবার কথাবার্তা শুরুই হয় এই প্রশ্নটি দিয়ে।)

উনি বললেন, পেটের দায়ে আসছি। পেটের দায়ে এ পথই কেন বেছে নিলেন? আপনি তো অন্যভাবেও রোজগার করতে পারতেন। আমার স্বামী আরেকটা বিয়ে কইরা আমারে ছাইড়্যা দিছে। এখন তারা কোথায় আছে জানি না। আমি আগে একটা বাসায় কাজ করতাম। ঐ বাসার পুরুষ মানুষটা আমারে অনেকবার নির্যাতন করছে। আমি একবার উনার স্ত্রীর কাছে সব খুইল্যা বলি। 

উনি উনার স্বামীর সাথে কি করছে আমি জানি না,তবে উনি আমারে বিদায় কইরা দিছেন সেদিনই। তারপরে আরেকটা বাসায় কাজ নিলাম। সেখানের পুরুষ মানুষটা আরো বেশী খারাপ। পরে ভাবলাম, আমার কাজের চেয়ে আমার দেহের মূল্যই যখন উনাদের কাছে এত বেশী, তো দেহ দিয়াই উপার্জন করমু।

এসব বলার সময় আবছা আলোতে আমি উনার মুখটা দেখছিলাম। সহজ-সাধাসিধে চাহনি। গায়ের রঙ শ্যাম বর্ণের। মুখটাতে বাঙ্গালী নারীত্বের একটা গাড় ছাপ। মুখটা এতোটাই মায়াবী যে একবার ঐ মুখের দিকে চাইলে চোখ কেন যেন আটকে যায়। তারপর আরো কিছু কথা হল যা এখানে না উল্ল্যেখ করাই শ্রেয়। আসল কথোপকথনে চলে যাই।

আমি বললাম, আপনার সন্তান সন্ততি কয়টা? স্পষ্ট দেখতে পেলাম তার চোখ ছলছল করে উঠেছে। উনি বললেন, আমার দুইটা ছেলে। কোথায় থাকে ওরা? বাড়িতে ওদের নানীর সাথে থাকে। পড়াশোনা করে ওরা? চোখদুটো উনার আগ্রহে উজ্জ্বল হয়ে উঠল বুঝতে পারলাম। বড় ছেলেটারে মাদ্রাসায় দিছি। ছোটডারে সামনের বছর দিমু। বড় ছেলেটারে হাফেজ বানামু। দোয়া কইরেন। আমার মাথায় উনার এই শেষ উক্তিটি বাজতে থাকল, ছেলেটারে হাফেজ বানামু, ছেলেটারে হাফেজ বানামু।

আপনার ছেলে কি আপনার এই উপার্জনের টাকায় পড়াশোনা করে? হ, আমি এই ঢাকা শহরে থাইক্যা-খাইয়া যে টাকা বাচাইতে পারি, সবই মার কাছে দেই। উনিই আমার ছেলে দুইটারে দেখেন। আপনার ছেলেরা আপনারে কাছে থাকতে চায় না? হ, এইবার ঢাকা আসার আগের দিন, ছোট ছেলেটা আমারে বলে, মা। আমগোরে তোমার সাথে ঢাকা নিয়া যাও। আমারও মাঝে মাঝে মনডা চায়, ওগোরে ঢাকা আইন্যা ভাল জায়গায় পড়াই। কিন্তু সে তো অনেক টাকার ব্যাপার।

আপনার ছেলেরা হাফেজ হলেই আপনার স্বপ্নপুরণ হবে? হ,ছেলে হাফেজ হইলেই এইসব কাজ আর করমু না। ওরা কখনও জানবো না ওদের মা কত খারাপ। এবার উনি কেঁদে দিলেন। আমারও চোখও ভিজে উঠল। আমি আর ওখানে বসে থাকতে পারলাম না। উনার ছেলেকে দেওয়ার জন্যে কিছু টাকা দিয়ে উঠে পড়লাম। ততক্ষণে চাঁদ সগৌরবে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে পৃথিবীকে।

উঠে যেতে যেতে ভাবছিলাম, বাংলাদেশে এটাই স্বাভাবিক। এখানে কেউ লালসার তাড়নায় বাংলাদেশকে দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়ে দিবে। অঢেল টাকা জমিয়ে রেখে কিয়ৎ অংশ ভোগ করে খালি হাতেই কবরে যাবে। আর কেউ নিজের পতিতাবৃত্তির টাকা দিয়ে ছেলেকে শিক্ষিত করার স্বপ্ন দেখবে।

ছেলেদুটিকে ভুলে গিয়ে বাবা ঠিকই চলে গিয়েছে, কিন্তু মা?

কিছুদূর গিয়ে পিছনে ফিরে দেখি, উনি এখনও সেখানেই বসে আছেন। চাঁদের আলোয় দেখা যাচ্ছে উনাকে। বসে আছেন নিস্তব্ধ মুর্তির মত। হয়ত একা বসে বসে কাদঁছেন। কে জানে কবে তার এই অপেক্ষার পালা শেষ হবে?
লেখাঃ আবু রুবাইয়া।
সহযোগিতায়ঃ অশান্ত ছেলেবেলা।
প্রকাশ্যেঃ ইন্টারনেট। 

বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫

বাংলাদেশে বন্ধ হয়নি ফেসবুক।

কে বলেছে ফেসবুক বন্ধ?
ডিজিটাল বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ সরকারের চেয়ে একধাপ এগিয়ে। বাংলাদেশে বন্ধ হয়নি সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে বড় মাধ্যম ফেসবুক। বাংলাদেশ ফেসবুক চালাতে ব্যবহার করুণ UC Browser. UC Browser ব্যবহার করে বাংলাদেশের যেকোন প্রান্ত থেকে সাধারণ নিয়মে ফেসবুকে লগইন করা সম্ভব এখন।
লেখাঃ আবু রুবাইয়া।
পরিচালক, বাংলাদেশ সাইবার লিংক লাইন। 

বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৫

আজ থেকে সমগ্র বাংলাদেশে অনিদিষ্ট কালের জন্য ফেসবুক বন্ধ।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যোম ফেসবুক। আজ থেকে সমগ্র বাংলাদেশে অনিদিষ্ট কালের জন্য ফেসবুক বন্ধ। ডিজিটাল বাংলাদেশে এনালগ আবার ফিরিয়ে আনবো আমার।

 লেখাঃ আবু রুবাইয়া।
সাহায্যেঃ অশান্ত ছেলেবেলা। 

মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫

পতিতাবৃত্তি উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজন পতিতাদের পুনর্বাসন। (অশান্ত ছেলেবেলা)



ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে একদিন সকাল ১০টার দিকে এক তৃষ্ণার্ত নারী পানি চেয়েছেন ওখানকার চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর কাছে। ঐ কর্মচারী পানি তো দেয়নি বরং লাঠি হাতে তাড়া করেছ ঐ নারীকে।

 উর্ধশ্বাসে দৌড়াতে গিয়ে অনেক কষ্টের রোজগারের টাকায় কেনা পায়ের জুতাজোড়া ফেলে আসে ঐ নারী। লোকটির লাঠির ঘা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারার আনন্দে নারী ভুলে যায় তার তৃষ্ণার কথা। 

ভুলে যায় সাধের জুতা জোড়ার কথা। অনেকদিন সকাল বেলা ভূতেরগলি কোন এক বাড়িতে পানি খেতে চায় আরেক তৃষ্ণার্ত নারী। গৃহকর্মী ঝাড়– হাতে দৌড়ে আসে ঐ তৃষ্ণার্তের দিকে। বলে হারামজাদী, খানকি, ঝাড় খা। কষ্টে তৃষ্ণার্তের গলা ভারি হয়ে আসে। বেঁচে থাকাটা কঠিনতর মনে হতে থাকে তার।

দু’জন তৃষ্ণার্ত নারীর এই কাহিনীগুলো কোন সিনেমার গল্প নয়। জীবননাট্যের কোন অঙ্কের এক বাস্তব দৃশ্য। এই দুই তৃষ্ণার্ত নারী পানি খেতে পায়নি কারণ তাদের অপরাধ হলো তারা পতিতা। পেটের দায়ে বেছে নিয়েছে এই পথ। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে জীবনের মৌলিক একটি চাহিদা যৌনতার ব্যবসা করে তারা। বেঁচে থাকার তাগিদে কিছু টাকার বিনিময়ে নিজের মনের বিরূদ্ধে এই কাজ তারা করে। 
জীবনের ন্যূনতম মানবিকতা বর্জিত এই দুই নারীর জীবনের টানাপোড়ার কাহিনী তাদের মুখেই শোনা যাক। 

স্বপ্না: (প্রকৃত নাম না) আমার বয়স ২৫। বছর দশেক আগে আমার বাবা-মা বিয়ে দেন আমাকে। দু’টি সন্তান যখন আমার কোল উজ্জ্বল করে তখন আমার স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। 

আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে যখন আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে যায় তার নতুন স্ত্রীর কাছে। আমার দু’টি সন্তানের প্রিয়মুখ আমাকে দিন দিন পাগল করে তোলে। রোজগারের জন্য কাজ খুঁজতে থাকি। ৩০০ টাকা বেতনে কাজ খুঁজে পাই একটি গার্মেন্টসে। ৩ মানুষের মৌলিক চাহিদার সঙ্গে ৩০০ টাকাকে অস্ত্র করে লড়াই করতে থাকি। 

সন্তানরা বড় হতে থাকায় আমার জীবনটা আরও কঠিন মনে হতে থাকে। শেষে অনেক কষ্টে একটি চুড়ির কারখানায় কাজ নেই ৯০০ টাকা বেতনের। টাকায় সংসার চালাতে গিয়ে হোঁচট খেতে থাকি।

                          একসময় এক মহিলার সাথে আমার পরিচয় ঘটে। তখনও আমি জানতাম না যে ঐ মেয়েটি একটি পতিতা। মেয়েটি একদিন আমাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিয়ে যায় এক লোকের কাছে। লোকটি আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আমার হাতে গুঁছে দেয় কিছু টাকা। এভাবে আমার পতিতা বৃত্তির সাথে পরিচয় ঘটে। আমি অপবিত্র হয়ে যাই, আমার জীবন পাল্টে যায়। 

আমাকে সবাই দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। পেটের দায়ে এবং সন্তানদের দিকে চেয়ে আমি ঢুকে যাই এই পতিতা পেশায়। আমাকে এখন সমাজে সবাই ঘৃণা করে। রাতের অন্ধকারে যারা আমার কাছে আসে দিনের বেলায় সে আমাকে চেনে না, চিনতে চায় না। আমার জীবনটা প্রচন্ড কষ্টে ভরে আছে। এই জীবন থেকে আমি মুক্তি চাই। সমাজের কোন সম্মানজনক কাজ পেলে আমি এই বঞ্চিত জীবন থেকে দূরে সরে যাব।


বন্যা: (আসল নাম নয়) আমার এখন বয়স ৩০। ১৬ বছর বয়সে আমি এক বাসায় কাজ করতাম। বাসার মালিকের ছেলের সাথে একসময় আমার প্রেম হয় এবং বিয়েও করি। কিন্তু এই বিয়ের সুখ বেশিদিন কপালে সয়না আমার। শ্বশুর-শাশুড়ি আমার উপর অত্যাচার করতে থাকে। 

অত্যাচারের চোটে আমি ঘর থেকে বেরিয়ে যাই এবং শান্তিবাগে একবাসায় কাজ নিই। একদিন আমি রিক্সা করে বাজারে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ আমার রিক্সায় একটি লোক উঠে পড়ে। ভয় দেখিয়ে আমাকে সে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যায়। উদ্যানে নিয়ে সে আমাকে টানাহেচঁড়া করতে থাকে। এসময় ৩ জন লোক আমাকে উদ্ধারের নাম করে অন্যত্র নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। 

অন্ধকার হয়ে যায় আমার পৃথিবী। কিসের জন্য আজানা ভয়ে আমি আর বাসায় ফিরি যাই না। পার্কের এক কোনায় বসে আমি হাউমাউ করে কাঁদতে থাকি। 

সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ছেলে আমাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে নিয়ে যায়। তারা দারোয়ানের কাছে আমাকে রেখে আমার জন্য খাবার আনতে গেলে ঐ দারোয়ান আমাকে ধর্ষণ করে। আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরলে আমি ভোর রাতের দিকে রাস্তায় নেমে হাঁটতে থাকি। 

সেখান থেকে কিছু পতিতা আমাকে উদ্ধার করে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। তখন থেকে আমার সুখ-দুঃখের অনুভূতিগুলো নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। আমি নাম লিখাই পতিতার খাতায়।


আজকের ফিচারে স্বপ্না ও সালমাকে আমাদের দেশের ভাসমান পতিতাদের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়ে তাদের কিছু জীবনচিত্র তুলে ধরব। আমাদের সমাজে দু’ধরনের পতিতা রয়েছে ভাসমান ও প্রাতিষ্ঠানিক পতিতা। 

প্রাতিষ্ঠানিক পতিতারা রেজিষ্ট্রিকৃত বা অনুমোদিত কোন পতিতালয় থেকে দেহ ব্যবসা করে। আর ভাসমানরা রাস্তাঘাটে, পার্কে বা কোন বাড়িতে থেকে তাদের পেশা চালিয়ে যায়। স্বপ্না ও সালমার সাথে কথা বলে জানা গেল জীবনে কত অনিশ্চয়তা পতিতারই এই জীবনে আসার পিছনে কোন না কোন ঘটনা আছে। এই জীবনে তাদেরকে ভোগ করে সমাজপতিরা, পুলিশ, ছাত্র, নাইটগার্ড, রিক্সাওয়ালা, বাস ড্রাইভার ইত্যাকার বিভিন্ন পেশার পুরুষ।

 আবার মধ্যবয়সী, যুবক, তরুণ এবং এমনকি কিশোর বয়সের ছেলেরা পর্যন্ত আসে এসব পতিতার কাছে। এসব ভাসমান পতিতা তাদের জীবনের সর্বোচ্চ মানসিক কষ্টকে সহ্য করে দেহব্যবসা চালায় কিন্তু এখানেও বঞ্চিত হয় তারা। দালালদের বখরা, পুলিশের উৎপাত, মস্তান ও সন্ত্রাীদের উটকো ঝামেলা, চাঁদবাজি, ভোগ করে টাকা না দিয়ে চলে যাওয়া ইত্যাকার ঝামেলায় তাদের প্রতিনিয়ত পড়তে হয়। চোর ও মদখোরদের উৎপাতেও তাদের মাঝে মাঝে সর্বশান্ত হতে হয়।

পতিতাবৃত্তি এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার এক অসম বন্টনের ফসল। নারীর প্রতি পুরুষের এবং পুরুষতান্ত্রিক মানুষের অসম দৃষ্টিভঙ্গিও এক সুদুরপ্রসারী ফসল হলো এই পতিতাবৃত্তি। এই পতিতাবৃত্তি নারীেেক করেছে পণ্য ও ভোগ্যবস্তু, সমাজের হাজারো লাঞ্ছনা ও গঞ্জনার শিকার যে নারী। যে নারী সমাজের শিকার হয়েও পতিতা বলে চিহ্নিত তারা বেশিরভাগই এই অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। 

স্বাভাবিক জীবনের স্বপ্ন দেখে। কেউ কেউ সমাজ থেকে এত কষ্ট পেয়েছে যে , তাদের জেদ চেপে বসেছে এই পেশা থেকে তারা আর কোথাও যাবে না। এই পেশায় থেকে যেসব পতিতা সন্তানের জন্ম নিয়েছে তাদের নিয়েও সমাজে হাজারো বিড়ম্বনা। স্বপ্নার এই পেশায় এসে একটি সন্তানের জন্ম হয়। এই সন্তানটি অবৈধ বলে স্বপ্না তাকে কত ভালবাসে। 

এই সন্তানটিকে যখন মানুষ স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখে না তখন স্বপ্নার কষ্টের আর অন্ত থাকে না। স্বপ্নারা জানে না কে তাদের সন্তানের বাবা? কিন্তু রাতের আঁধারে যারা তাদের কাছে আসে, আবার দিনের আলোয় তারাই ওদের পতিতা বলে গালি দিয়ে বুক ফুলিয়ে হাঁটে। ভাসমান পতিতাদের নিয়ে মাঝে মাঝে কিছু বেসরকারী সংস্থা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন কাজ করে বটে, তবে সেটি ওদের জন্য তেমন কোন উন্নয়ন বয়ে নিয়ে পারেনি। 

কেয়ার বাংলাদেশ-এর শক্তি প্রকল্প নামে প্রজেকেক্টটি ভাসমান পতিতাদের নিয়ে কিন্তু কাজ করেছে। সেখানে আড়াই বছর ধরে কাজ করছে স্বপ্না ও সালমা। পরীক্ষার মাধ্যমে সংস্থাটি সার্ভেয়ার হিসাবে কিছু পতিতাকে দৈনিক ৮০ টাকা হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের তারা দেয় দিনে ৫০ টাকা। এদের কাজ ঢাকা শহরের ভাসমান পতিতাদের ওপর কিছু জরিপ করা ও তাদেরকে সংস্থার অন্তর্ভূক্ত করা। এই কাজে দিনে ৫০ টাকা বা ৮০ টাকা পোষায় না বলে জানায় স্বপ্না ও সালমা। কিন্তু কোন মানুষ পতিতার কাছে ছুটে যায় কিসের সন্ধানে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়োর মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. নাসরীন ওয়াদুদ সমাজের পতিতাবৃত্তি ও পতিতালয়ে গমনের কারণ হিসেবে স্বাভাবিক যৌনচাহিদা অবদমনকে প্রথমত দায়ী করেছেন। তিনি বলেন প্রত্যেকটি মানুষের যৌনচাহিদা থাকে। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা একটি মেয়ে যতটা তার যৌনচাহিদাকে চেপে রাখে, একটি ছেলে ততটা চেপে রাখে না বা চেপে রাখার জন্য অতটা সামাজিক চাপ বোধ করে না। 

এভাবে ছেলেটি সুযোগ থাকার কারণে পতিতালয়ে যায় যেটা আমাদের সমাজে এখন কোন ব্যয়বহু ব্যাপারও নয়। নাসরীন আরও বলেন, একটা ছেলে তার ইচ্ছামতো যখন তখন বাইরে বেরুতে পারে, যার জন্য বাবা-মার কাছে সব সময় তাকে জবাবদিহি করতে হয় না। এই স্বাধীনতার সাথে যদি যোগ হয় অসৎ বন্ধুসঙ্গ তাহলে ছেলেটি অনেক ধরনের নিষিদ্ধ কাজের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। এভাবে পুরুষতান্ত্রিক স্বাধীনতা একটি ছেলেকে নিষিদ্ধ কাজের সাথে যুক্ত করে। এই সমাজব্যবস্থা এভাবে পুরুষদের পতিতাগামী করে।

বিল্পবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক এবং গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভানেত্রী মোশরেফা মিশুর কাছে আপরাজিতা থেকে প্রশ্ন রাখা হয়, সমাজের পতিতাবৃত্তি উচ্ছেদের জন্য তিনি কিছু ভাবছেন কিনা। মোশরেফা মিশু জানালেন, “আমরা মানুষের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করি। পতিতারা এই সমাজের অবহেলিতদেরও অবহেলিত। 

সমাজব্যবস্থার শিকার এই নারীরা যতদিন পতিতা বলে বিবেচিত থাকবে, ততদিন নারী পণ্যের গন্ডি থেকে বেরুতে পারবে না। আমাদের গার্মেন্টস শ্রমিকক ঐক্য ফোরামের শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করে। উপযুক্ত সংগঠক ও কর্মী তৈরি হলে আমরা অচিরেই পতিতাবৃত্তি থেকে নারীদের উদ্ধারের জন্য কাজ করব।

আমাদের সমাজে পতিতারা সামাজিক অব্যবস্থার প্রতীক। তারা একবার অত্যাচারিত হয় দরিদ্র বলে, আবার হয় নারী বলে, আবার আরেকবার হয় বেশ্যা বলে। বিভিন্ন সময়ে এই অবস্থার উন্নতিকল্পে পতিতালয় উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। 

বিভিন্ন সামাজিক অলিখিত আইন করে তাদের পিটিয়ে দূর করা হয়েছে, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি কিছু। কারণ যৌনতা নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থা। একই কাজ করার ফলে নারী ‘পতিতা হলেও নর ‘পতিত হয় না। পতিতাদের পুনর্বাসন ও মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন সমাজের অগ্রগতির জন্য অতীব জরুরী।

নিষিদ্ধ পল্লীর স্থায়ী বাসিন্দাদের চেয়েও অসহায় শহরের ভাসমান অসংখ্য পতিতা। ঝড়বৃষ্টি বাদলেও এদের মাথার ওপরে খোলা আকাশ ছাড়া নেই কোন আশ্রয়। ক্ষুধা- পিপাসায় কাতর, রোদে বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত ক্লান্ত জীবনটাকে টেনে নিয়ে যেতে হয় তাদের আমৃত্যু। 

নদী ভাঙ্গনের বলি আর বানভাসী যাত্রায় এক টুকরো আশ্রয়ের সন্ধানে মানুষ পাড়ি জমায় শহরে। গৃহস্থ আঙ্গিনার কন্যা, জায়া, জননী শহরের পাথুরে সড়কের বুকে হয়ে দাঁড়ায় পতিতা। গৃহ থেকে বিতাড়িত কিংবা গৃহকত্রীর অত্যাচারে পলাতক গ্রাম থেকে আসা গ্রামের গৃহপরিচারিকারা তাদের সময় টাকার অভাব কিংবা অন্য কোন কারণে ফিরে যেতে পারে না নিজস্ব ঠিকানায়। দু’এক রাতের জন্য আশ্রয় খুঁজতে গিয়ে দুর্বৃত্তের কবলে পড়ে তারা হয়ে যায় আঁধার জগতের স্থায়ী বাসিন্দা। 

কখনও ক্ষুধার্ত শিশুর মুখে অন্ন তুলে দিতে গিয়ে স্বেচ্ছায় এ পথে পা বাড়ায় কোন তরুণী মা। ফুটপাথে বেড়ে ওঠা শিশুরাও অধিকাংশ সময় পতিতার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। কোন স্থায়ী আবাস না থাকায় এদের দেখা যায় যত্রতত্র। পার্ক, সিনেমা হল, সদর রাস্তা, আঁধার গলি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সর্বত্র এদের অবাধ বিচরণ। 

শহরের কিশোর তরুণ যারা নিষিদ্ধ পল্লীতে যাওয়ার সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারত না কখনও, তারাও নিষিদ্ধ কৌতুহলের তাড়ানায় এদের সংস্পর্শে আসছে। ক্রমশ ভেঙ্গে যাচ্ছে সমাজের নৈতিক অবকাঠামো। ঢাকা শহরে কোথায় এরা নেই? কমলাপুর, সদরঘাট, ক্রিসেন্ট লেক, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, দোয়েল চত্বর, গুলশান পার্ক থেকে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও এদের দেখা যায়। এদের রোজগারে ভাগ বসায় পুলিশ, স্থানীয় মস্তান, দলের সর্দারণী, কে নয়?-বড় অসম্পূর্ণ তাদের চিন্তা। কান্দুপট্টি থেকে পতিতাদের উচ্ছেদের পর পতিতাবৃত্তি থেকে অসহায় বাসিন্দাদের মুক্তি ঘটেনি। 

তারা আশ্রয়হীন হয়ে ছড়িয়ে পড়েছি সারা শহরে। পতিতাবৃত্তি উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজন পতিতাদের পুনর্বাসন। সম্মানজনক পেশায় তাদের নিয়োজিত করে সামাজিক মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া অত্যন্ত জরুরী। ভাসমান পতিতাদের চাই আশ্রয়, কাজ, সম্মান।
লেখাঃ আবু রুবাইয়া।
সাহায্যেঃ ইন্টারনেট।
প্রকাশ্যেঃ অশান্ত ছেলেবেলা। 

ধর্ষিত সমাজি সৃষ্টি করে বন্যার মতো মেয়ে কে। (গল্প নয় সত্য)


গ্রামের আর পাঁচটি মেয়ের মতো বন্যা ও (আমার প্রিয় নাম) নিয়মিত স্কুলে যেতেন। তাঁরও স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শিখে স্বামীর ঘরে যাবেন, কোলজুড়ে আসবে স্নেহের দুলালদুলালী। তাঁর বাবা-মায়েরও নিশ্চয়ই একই স্বপ্ন ছিল। এভাবেই কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা রাখলেন খুলনার....... এক স্বচ্ছল কৃষক পরিবারের কন্যা বন্যা।

[পাঠক সামাজিক ও পেশাগত দায়বদ্ধতার কারণে এবং বন্যা ও তাঁর পরিবারের প্রতি সম্মান জানাতেই তার পরিচয় গোপণ করা হলো।]

পাশের গ্রামের স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বন্যা র প্রতিদিন যাওয়া-আসা মিলিয়ে পাঁচ কিলোমটার পথ মাড়াতে হয়। সঙ্গী সহপাঠী একই পাড়ার মেয়ে স্বপ্না (এটিও ছদ্মনাম)। সকাল ৮টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুলে পৌছানো এবং বিকাল ৫টায় বাড়ি ফেরা এভাবেই রুটিনে পরিণত হয়েছিল বন্যা ও স্বপ্নার দিনলিপি।

স্কুলে যাতায়াতের পথে স্লিম ফিগারের সুন্দরী বন্যার দিকে কুনজর পড়ে পাশের গ্রামের লিটনের (যৌক্তিক কারণে এখানেও প্রকৃত নাম ব্যবহার করা হলো না)। স্কুলের একেবারে কাছেই লিটনদের বাড়ি এবং বাড়ির পাশের একমাত্র পথ মাড়িয়েই পৌছাতে হয় স্কুলটিতে। বিকল্প পথে অতিরিক্ত এক কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়।

যাতায়াতের পথে নিয়মিত ইভটিজিংয়ের শিকার হতে থাকেন বন্য। সঙ্গী স্বপ্নাও নিরূপায়। তিনিও যুবতী। শান্ত ও বুদ্ধিমতি বন্যা কোনো প্রতিবাদ না করে মুখ বুজে সব সহ্য করে রোজকার রুটিন মেনে স্কুলে যাতায়াত করতে থাকেন। তবে, ইতিমধ্যে বিষয়টি বাড়িতে বাবা-মাকে জানিয়েছেন তিনি। তাঁরাও মেয়েকে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, দু’বছরের মধ্যে এসএসসি পাশ করলে শহরের কোনো কলেজে ভর্তি করা হবে তোমাকে। তখন আর এসব ঝামেলা থাকবে না।

কিন্তু বখাটে-অশিক্ষিত যুবক লিটনের উত্যক্তের মাত্রা যখন সীমা ছাড়িয়ে গেলো তখন বাধ্য হয়েই বন্যা কে নিয়ে তাঁর বাবা বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানালেন। এক ছাত্রীর মানসম্মানের কথা ভেবে প্রধান শিক্ষক নিজেই গোপনে ছেলেটির বাবা, চাচা ও খালুকে অবহিত করেন। এর পর অভিভাবকরা লিটনকে বকা-ঝকা করায় মাস দুয়েক শান্ত থাকে সে। বন্যা , স্কুলের শিক্ষকমণ্ডলী ও তাঁর অভিভাবকরাও স্বস্তি পান। তাঁদের মধ্যে ধারণা জন্মে যে, লিটন হয়তো নিজের ভুল বুঝতে পেরে ওই পথ থেকে সরে এসেছে।

কিন্তু প্রবাদ আছে যে, ‌চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনী। কিছুদিন দৃশ্যত নিরব ও নিষ্ক্রিয় থাকলেও ভেতরে ভেতরে হিংস্র হয়ে ওঠে সে। বন্যা র চরম সর্বনাশ করে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রহর গুণতে থাকে প্রতিহিংসাপরায়ণ লিটন। অবশেষে কালোমেঘে ঢাকা প্রবলবর্ষণরত এক বিকালে পৈশাচিক লালসা পূরণের সুযোগ পায় সে। অভিশপ্ততার কালিমায় ছেয়ে যায় বন্যা র জীবন।

কিন্তু কীভাবে পূরণ হলো লিটনের জৈবিক লালসা ও মানবরূপী দানবটির ভেতরের পৈশাচিকতা?
তথ্যসূত্র: জীবনের দামে কেনা জীবিকা?
লেখাঃ আবু রুবাইয়া।
সত্যের পথে অটুট। 

সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫

একটি পতিতার জীবনী।



বাংলা অভিধানে লালবাতির এলাকা নামে বিশেষ একটা জায়গা আছে। মানুষ টাকার বিনিময়ে জৈবিক চাহিদা মেটাতে যায় সেখানে। আর কেউ পেট বাঁচাতে নামে সেই কাজে।

আমি, আবু রুবাইয়া। এই গল্পটি লিখার জন্য আন্তরিক ভাবে খুবি দুঃখিত। 

যাকে খাটি বাংলায় পতিতালয় বলে। তন্নি (মানুষের দেয়া নাম) মেয়েটি কদিন হল অসুখ থেকে উঠেছে। কাজে যেতে পারছে না। কাজের জন্য রাতে বের হতে হয়। বৈরী আবহাওয়া, খদ্দের পাওয়া যায়না। অসুখের জন্য কিছু টাকা ঋণ ও করতে হয়েছে তাকে ঋতুর কাছ থেকে। তন্নি তার বান্ধবী সেও একই কাজ করে। 

যেভাবেই হোক ঋণের টাকা আগে শোধ করতে হবে। এ পথে এসেছে আজ প্রায় দুই বছর। পাড়া প্রতিবেশি মামা নিয়ে এসেছে গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে। (মা বাবার অসুখ তান্নি কে এ কাজ করতে বাধ্য করেছে) সেদিন বৃষ্টি উপেক্ষা করেও কাজে বের হয় তন্নি। রাত হলেও সেজে বের হতে হয়, না হলে খদ্দেরের চোখে লাগে না। ভালো সাজ দিতে পারলে রেট টাও বেশি পাওয়া যায়। 

দালাল পুলিশ নিয়ে যায় কাজের অর্ধেকের বেশি টাকা। পথে পথে ঘুরতে হয়, বিশেষ কিছু জায়গা আছে কাস্টমাররা সেখানে আসে। সন্ধ্যা থেকে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে, তাই আজ মানুষ কম। তবুও যাদের অনেক ক্ষিধা ঠিকই তারা আসবে, তন্নির ও পেট বাঁচাতে হবে, এ ছাড়া তার অন্য কোন উপায় নেই। কয়েকজনের সাথে কথা বলছে, কিন্তু দর দামে মিলছে না। 

রাত প্রায় অনেক হয়ে গেছে।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও বাড়ছে। রাস্তা পার হবে, ঐ দিক টাই কিছু লোক দেখা যাচ্ছে। রাস্তাটা পার হওয়া টা ও অনেক কঠিন। লোক গুলি চলে যাচ্ছে তাই দ্রুত যেতে হবে, দুদিক না দেখেই দৌড় দিল তন্নি, কিন্তু রাস্তাটা আর পার হতে পারলো না। 

একটি জীবন ধ্বংস কারি হিংস্র ট্রাক চাপা দিয়ে চলে যায় তন্নি কে। আশপাশের লোকজন জড় হয় সেখানে। লালবাতি এলাকায় খবর পৌছে যায় তন্নি এক্সিডেন্ট করেছে। 

সেখানে পুলিশ আসে, পুলিশ দেখে মানুষ জন সরে পড়ে। তখনো দেহে প্রান ছিল তন্নির। পুলিশ হাসপাতালেয় কথা বলে নিয়ে যায় তন্নিকে। রাত গড়িয়ে সকাল হয়, বৃষ্টির ভাব টা আজ কেটে গেছে। ঝকঝকে রোদ। সেই চির চেনা রাস্তা, বড় বড় গাড়ি শতশত মানুষ।

 রাতে এখানে কিছু হয়ে ছিলো বুঝারই উপায় নেই। কয়েক জন মানুষ কয়েকটা হাসপাতালে তন্নির খোঁজ করেছিল। কিন্তু তন্নি নামের কোন রোগী সেখানে ভর্তি হয় নি। থানায় ও গিয়েছিল, তারাও কিছু জানে না।

মন্তব্যঃ একটি তন্নি আজ রাতের অন্ধকারে গায়েব হয়ে গেল। 
এভাবে হয়তো প্রতিদিন নতুন করে গায়েব হয়ে যাচ্ছে অন্য কোন তন্নির জীবন। কিছু কিছু মানুষ চিরকাল অন্ধকারে থেকে যায়। পরিশেষে বলতে চাই, জীবন বড়ই কঠিন যা একজন মানুষকে সব কিছু করতেই বাধ্য করে। এর জন্য আমরাই দায়ী। (গল্প টি সম্পূর্ণ কাল্পিনীক)

লেখকঃ আবু রুবাইয়া।
প্রকাশঃ www.facebook.com/abu.rubaiya

রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৫

এরাই পতিতা? নাকি, এ সমাজ পতিতা?



কয়েকদিন আগে মাদারীপুরের পতিতাপল্লী উচ্ছেদ করা হয়েছে এলাকাকে পাপ কাজ থেকে উদ্ধার করতে এবং সমাজকে কলুষমুক্ত রাখতে। বেশ ক'বছর আগে নারায়ণগঞ্জের টানবাজার থেকেও এভাবেই উচ্ছেদ করা হয়েছিল যৌনকর্মীদের এবং তারপরের ঘটনা আমরা সবাই জানি। 
এসব যৌনকর্মী ছড়িয়ে পড়েছিল রাস্তাঘাট, আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে হোটেল এবং বস্তিতেও। একটা এলাকাকে পাপমুক্ত করতে গিয়ে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। আমি কোনোভাবেই এই পেশার পক্ষে নই। কিন্তু সমাজের সুধীজনদের একটু ভেবে দেখতে অনুরোধ করি।
  • একটা মেয়ে কতটুকু বিপদে পড়লে বা কোন অবস্থায় নিজেকে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত করে বা আদৌ তারা নিজেরা স্বেচ্ছায় এ পেশায় যুক্ত হয় কি-না?
  • রাষ্ট্র বা সমাজ যতদিন পর্যন্ত এসব হতভাগা মেয়ের জীবিকা নির্বাহে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করবে, ততদিন পর্যন্ত কোনো ভাবেই এ পেশাকে নির্মূল করা সম্ভব কি?
  • যদি তা না হয় তাহলে ২-১টি পল্লী উচ্ছেদ করে এসব মেয়েকে ভাসমান করে পুরো সমাজটাই কি পতিতাপল্লী হয়ে উঠবে না?
যেসব সুধীজন এই অসাধারণ সমাজ কল্যাণমূলক ভালো কাজটি করে বাহবা কুঁড়িয়েছেন তাদের কাছে আমার সবিনয়ে কিছু প্রশ্নঃ

১.  এখানে যেসব মেয়ে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের কতজন স্বেচ্ছায় এবং শখ করে এ কাজ করছে?

২. নাকি ভদ্রবেশী শয়তানদের লোভ-লালসার শিকার হয়ে বাধ্য হয়েছে এই পথে আসতে?

৩. এসব মেয়েকে সমাজ, সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন করে নাম দেওয়া হয়েছে পতিতা। কিন্তু যারা এ জায়গায় বিকৃত লালসা পূরণ করতে যান, তাদের কি পতিত বলা হচ্ছে কি-না?

৪. উচ্ছেদের মত মহৎ উদ্যোগে তাদের কি চিহ্নিত করে কোনো শাস্তি দেওয়া হবে?

৫. পতিতাবৃত্তি বাংলাদেশের আইনে অবৈধকোনো পেশা নয়। সরকারি আইন মেনে রীতিমতো রেজিস্ট্রেশন করে এ পেশায় আসতে হয় এবং পতিতা পল্লীর সব মেয়েই রেজিস্ট্রিকৃত পেশাদার এবং তাদের ভোটাধিকার রয়েছে। তাহলে কেন এবং কার স্বার্থে এই উচ্ছেদ?

আমরা সব সময়ই লক্ষ করি, নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় নব্য সমাজকর্মী বা ভালো মানুষের আবির্ভাব ঘটে যারা নিজেদের ভালো জাহির করতে এসব তথাকথিত কাজগুলো করে নিজেদের জনপ্রিয় করার চেষ্টা করেন। এ বিষয়টি আমরা এর আগে নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের সময়ও দেখেছি। 

যতদূর জানি, হাইকোর্টের একটি নিষেধাজ্ঞা ছিল এই পল্লী উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। তারপরও দিনদুপুরে সবার সামনে এই বস্তি উচ্ছেদ হয়েছে। তাহলে আইন আর প্রশাসন কি এতই দূর্বল, নাকি আইন সবার জন্য সমান নয়? বাংলাদেশের সংবিধানে স্পষ্টত উল্লেখ আছে_ ধর্ম-বর্ণ, পেশা বা অন্য কোনো কারণে কারও স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা যাবে না বা কারও বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। 

কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা এর কোনোটারই প্রয়োগের কথা এখন পর্যন্ত শুনিনি। একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন নৌবন্দরে পতিতাপল্লী ছিল, এখনও টাঙ্গাইল, দৌলতদিয়া এবং খুলনায় বড় পতিতালয় আছে। এখানে মূলত যেসব মেয়ে এ পেশায় এসেছে তাদের বেশির ভাগই প্রতারণা এবং পাচারের শিকার হয়ে এসেছে। 
অনেকে আবার মায়ের উত্তরাধিকারের সূত্র ধরে এ পেশায় এসেছে বা আসছে। মূলত এখানে যেসব মেয়ে আছে তারা কেউই স্বাধীন নয়, এরা বাড়িওয়ালি, দালাল এবং সমাজপতিদের হাতে জিম্মি। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, এদের আয়ের একটা বড় অংশ বাড়িওয়ালি, দালাল আর সমাজপতিদের পকেটে যায়, এর বাইরে যা থাকে তা খুবই সামান্য এবং তা দিয়ে কোনোমতে জীবিকানির্বাহ করে তারা। 

আরও মজার বিষয় হচ্ছে, এরকম অনেক মা-বাবা আছেন, তারা মেয়ের পেশাকে জেনেও তার কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিচ্ছেন; কিন্তু তাকে মেয়ের মর্যাদা দিচ্ছেন না। কারণ, সার্থের কোনো রঙ নেই। আমরা প্রতিনিয়ত নানা অন্যায়, অসততা, চুরি, ঘুষ খাচ্ছি। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত আছি। সমাজের উঁচুতলায় ওঠার জন্য নিজের স্ত্রী বা মেয়েকে অন্যের ভোগের শিকার করছি। কিন্তু আমরা পতিত হই না। আমাদের পার্টির জৌলুস বাড়ানোর জন্য সোসাইটি গার্ল আমাদের স্ট্যাটাস বাড়ায়। 

আর ওইসব আধপেটা খাওয়া ততধিক দরিদ্র, অপুষ্ট নোংরা মেয়ে গুলো পেটের দায়ে অথবা বাধ্য হয়ে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় তার দেহ বিক্রি করে, তাতে আমাদের সমাজ নোংরা হয়ে যায়, যার খদ্দের আবার আমরাই। পরিশেষে একটা গল্প বলি, যদিও এটা সত্য ঘটনা রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর রাশিয়া সরকার একটা কাজ করেছিল, সেখানকার পতিতা পল্লীতে যারা যেত তাদের সবার নাম, ছবিসহ বাসার ঠিকানা লেখা বাধ্যতামূলক ছিল এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর সেসব নামের তালিকা, ঠিকানা ও ছবি প্রকাশ করা হতো জনসমক্ষে। এর কিছুদিন পর দেখা গেল, ওইসব পল্লীতে আর খদ্দের পাওয়া যাচ্ছে না। 

এক সময় খদ্দেরের অভাবে পল্লীর মেয়েরা এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হলো এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হলো। আমরা তথাকথিত সুধীজনরা সবসময়ই অন্যের দিকে আঙুল তুলে বেড়াই। 

কখনোই কোনো ক্ষেত্রে নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখি না। এবং সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, ব্যাধির উৎস নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই এবং ব্যাধিমুক্ত হওয়ারও কোনো ইচ্ছা নেই, তাই একটি নির্দিষ্ট জায়গার ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে সব জায়গায়।

বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৫

আমিই সেই মেয়ে।


আমিই সেই মেয়ে। বাসে ট্রেনে রাস্তায় আপনি যাকে রোজ দেখেন যার শাড়ি, কপালের টিপ কানের দুল আর পায়ের গোড়ালি আপনি রোজ দেখেন। আর আরও অনেক কিছু দেখতে পাবার স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নে যাকে ইচ্ছে মতন দেখেন। আমিই সেই মেয়ে। 

বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে দিনের আলোয় যার ছায়া মাড়ানো আপনার ধর্মে নিষিদ্ধ, আর রাতের গভীরে যাকে বস্তি থেকে তুলে আনতে পাইক বরকন্দাজ পাঠান আপনি আর সুসজ্জিত বিছানায় যার জন্য অপেক্ষায় অধীন হয় আপনার রাজকীয় লাম্পট্য আমিই সেই মেয়ে। 

আমিই সেই মেয়ে-আসামের চাবাগানে ঝুপড়ি কামিন বস্তি থেকে যাকে আপনি নিয়ে যেতে চান সাহেবি বাংলোয় মধ্যরাতে ফায়ার প্লেসের ঝলসে ওঠা আলোয় মদির চোখে দেখতে চান যার অনাবৃত শরীর আমি সেই মেয়ে। 

রাজস্থানের শুকনো উঠোন থেকে পিপাসার জল আনতে যাকে আপনি পাঠিয়ে দেন দশ মাইল দূরে সরকারি ইঁদারায়- আর কুড়ি মাইল হেঁটে কান্ত বিধ্বস্ত যে রমণী ঘড়া কাঁখে ঘরে ফিরলেই যাকে বসিয়ে দেন চুলার আগুনের সামনে আপনার রুটি বানাতে আমিই সেই মেয়ে।

আমিই সেই মেয়ে- যাকে নিয়ে আপনি মগ্ন হতে চান গঙ্গার ধারে কিংবা ভিক্টোরিয়ার সবুজে কিংবা সিনেমা হলের নীল অন্ধকারে, যার চোখে আপনি একে দিতে চান ঝুটা স্বপ্নের কাজল আর ফুরিয়ে যাওয়া সিগারেটের প্যাকেটের মত যাকে পথের পাশে ছুঁড়ে ফেলে আপনার ফুল সাজানো গাড়ি শুভবিবাহ সুসম্পন্ন করতে ছুটে যায় শহরের পথে- কনে দেখা আলোর গোধুলিতে একা দাঁড়িয়ে থাকা আমিই সেই মেয়ে।

আমিই সেই মেয়ে- এমন কি দেবতারাও যাকে ক্ষমা করেন না। অহংকার আর শক্তির দম্ভে যার গর্ভে রেখে যান কুমারীর অপমান আর চোখের জলে কুন্তী হয়ে নদীর জলে বিসর্জন দিতে হয় কর্ণকে আত্মজকে। আমিই সেই মেয়ে। 

সংসারে অসময়ের আমিই ভরসা। আমার ছাত্র পড়ানো টাকায় মায়ের ওষুধ কেনা হয়। আমার বাড়তি রোজগারে ভাইয়ের বই কেনা হয়। আমার সমস্ত শরীর প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে। কালো আকাশ মাথায় নিয়ে আমি ছাতা হয়ে থাকি। ছাতার নিচে সুখে বাঁচে সংসার।

আপনি, আপনারা আমার জন্য অনেক করেছেন। সাহিত্যে কাব্যে শাস্ত্রে লোকাচারে আমাকে মা বলে পুজো করেছেন। প্রকৃতি বলে আদিখ্যেতা করেছেন- আর শহর গঞ্জের কানাগলিতে ঠোঁটে রঙ মাখিয়ে কুপি হাতে দাঁড় করিয়েও দিয়েছেন। হ্যা, আমিই সেই মেয়ে। 

একদিন হয়ত- হয়ত একদিন- হয়ত অন্য কোন এক দিন আমার সমস্ত মিথ্যে পোশাক ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আমিই হয়ে উঠবো সেই অসামান্যা। খোলা চুল মেঘের মত ঢাকবে আমার খোলা পিঠ। দু চোখে জ্বলবে ভীষণ আগুন। কপাল-ঠিকরে বেরুবে ভয়ঙ্কর তেজরশ্মি। হাতে ঝলসে উঠবে সেই খড়গ। দুপায়ের নুপুরে বেজে উঠবে রণদুন্দভি। নৃশংস অট্টহাসিতে ভরে উঠবে আকাশ। দেবতারাও আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে বলতে থাকবেন মহামেঘপ্রভাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাং কালিকাং দক্ষিণাং মুণ্ডমালা বিভুষিতাং। বীভৎস দাবানলের মত

আমি এগোতে থাকবো। আর আমার এগিয়ে যাবার পথের দুপাশে মুণ্ডহীন অসংখ্য দেহ ছটফট করতে থাকবে- সভ্যতার দেহ, প্রগতির দেহ, উন্নতির দেহ, সমাজের দেহ। হয়ত আমিই সেই মেয়ে। হয়ত, হয়ত, বা।

সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৫

শিশুশ্রম।

সারা বিশ্বের এখন ভয়ংকার পেশার নাম শিশু শ্রম। দিনে দিনে এই শ্রমের শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে, তারা আসহায় হচ্ছে কিন্তু প্রতিকারে কিছুই হচ্ছে না। 

                               বিশ্বের বিভিন্ন এনজিও সংস্থা, সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থা এর বিরুদ্ধে আলাপ, আলোচনা, পরিসংখ্যান তুলে ধরলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রতিদিনই জীবন ধারণ আর দু’বেলা আর দু’মুঠো অন্নের জন্য তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতেই দ্বিধাবোধ করছে না। 

মূলত তাদের নিজেদের খাওয়া আর পরিবারের খাওয়ার জন্য শিশুরা লেখাপড়ার পরিবর্তে পেশার কঠিন আবর্তে জন্মের পরেই চলে যাচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের একটি শ্রেণী তাদের ব্যবহার করে সুবিধা ভোগ করছে। এদের সোনালী ভবিষ্যত অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। 

যে বয়সে তাদের খাতা কলম নিয়ে স্কুলে যাবার কথা ছিলো, ঠিক সেই বয়সে শুধুমাত্র দারিদ্র্যের কারণে আজ ওরা শিশু শ্রমিক। ওদের প্রতিনিয়ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজের মধ্যে রয়েছে মোটর ওয়ার্কসপে কাজ করা, ওয়েল্ডিং, গ্যাস কারখানা, বেলুন কারখানা, লেদ মেশিন, রিকশা চালানো, মাদক বাহক, বিড়ি শ্রমিক, বাস-ট্রাকের হেলপার, লেগুনার হেলপার, নির্মাণ শ্রমিক, গৃহ শিশু শ্রমিক, এমব্রয়ডারি, জাহাজ শিল্প, চিংড়ি হ্যাচারি, শুঁটকি তৈরি, লবণ কারখানা, বেডিং স্টোরের শ্রমিক, ইট ভাঙা, ইট ভাটা শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, ট্যানারি এবং রঙ মিস্ত্রিসহ আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ। 

শিশু শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এসমস্ত  প্রতিষ্ঠানের মালিকরা স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক কোন আইনের তোয়াক্কা করছে না কেউ। এমনকি মজুরি কম দিয়ে প্রতিনিয়তই তাদের ঠকাচ্ছে। সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদ উপেক্ষা করে শিশুদের দিয়ে জোর করে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অথচ এখন পর্যন্ত শিশু শ্রমের দায়ে বাংলাদেশে একজনকে শাস্তি পেতে হয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে শিশু শ্রমের অন্যতম বা একমাত্র কারণ হলো দরিদ্র্য। দেশের ৩১ দশমিক ৬ ভাগ মনুষ দরিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। 

এ সব পরিবারের সদস্যদের মাথাপিছু আয় দৈনিক ৮০ টাকারও কম। এদের অনেকের নূন্যতম কোন জমিও নেই। ফলে এসব পরিবারের শিশুরা তাদের পেটের ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য শিশু শ্রমে নিপতিত হয়। নিজেদের জন্য, পরিবারের জন্য তারা জীবন বাজি রেখে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতেও দ্বিধা বোধ করে না। 

এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে অর্থাৎ শিশু শ্রম নিবরণ করতে হলে প্রয়োজন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বিত উদ্যোগ। পরিবারগুলোর আর্থিক সামর্থ্য বৃদ্ধি ও পরিবার পরিকল্পনার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কারণ অধিকাংশ দরিদ্র্য পরিবারের বেশি সন্তান থাকে। 

শিক্ষা ব্যবস্থায় বৃত্তিমূলক শিক্ষা দিতে হবে। প্রয়োজনে এ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক স্তর থেকে কারিগরি স্কুলের ব্যবস্থা করে উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। যাতে তারা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ নিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা হতে পারে।

শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৫

Schanck Process. Drop Test, Test Weight Calibration (SPAN SETTING), Tare Calibration (ZERO) & Speed Calibration.


DROP TEST

01. Stop the Mill.
02. Rotate direction of common belt.
03. Change mode selector switch of Weighing Panel to mode-2 (Panel mode)
04. Press Function Distributor key on Intecont Plus Unit in panel in home display.
05. Press up/down arrow key to bring “Start Keyboard mode"
06. Symbol will come in upper left hand corner of Intecont Plus display.
07. Press green button, -------t/h will be displayed in Intecont Plus display.
08. Give at lest 50% set point (100% set point is preferable). E.g. for clinker, give 65t/h set point. That means, press 65 and then “Enter"(Red) key.
09. Press M=0 key and press “1” and then “Enter" key. This will make the counter 1=0.
10. Press up/down arrow key to bring
“Z1=00000.0" display in lower display field.
11. Now give start command from Intecont Plus by pressing Start key from the Intecont Plus keyboard.
12. Observe the Z1 value. When it comes to 2Tons, Press Stop key to stop the feeder.
13. Now measure the discharged material in a good scale.
14. Calculated the Error %ge as below:-

              Scale Value
D02-----------------------------× Pmeter D02 value
               Z1 value

15. Now enter the new calculated value in Parameter D02.

16. To enter the corrected value in Parameter D02, Press Function Distributor key on Intecont plus.
17. Press up/down arrow key to bring
“Programming"
18. Press “Enter" key.
19. Now press up/down arrow key to bring “Enter Parameter"
20. Press “Enter" key.
21. Password entry field will be displayed.
22. Enter 07734 and press “Enter" key.
23. Now press up/down arrow key to bring “Block D".
24. Press “Enter" key.
25. Now press up/down arrow key to bring Parameter “D02"
26. Press “Enter" key.
27. Press green button,--------will be displayed in Intecont plus display.
28. Now enter the Calculated value in this and press “Enter"
29. Press Escape key 2 times to come to home display.
30. Start back the Mill.



TEST WEIGHT CALIBRATION (SPAN SETTING)

01. Stop the Mill.
02. Change mode selector switch of Weighing Panel to mode-2 (Panel mode)
03. Press Function Distributor key on Intecont Plus Unit in panel in home display.
04. Press up/down arrow key to bring “Start Keyboard mode"
05. Symbol will come in upper left hand corner of Intecont Plus display.
06. Press green button, -------t/h will be displayed in Intecont Plus display.
07. Give 100% set point. E.g. for clinker, give 65t/h set point. That means, press 65 and then “Enter"(Red) key.
08. Now give start command from Intecont Plus by pressing Start key from the Intecont Plus keyboard.
09. Press Function Distributor key on Intecont Plus.
10. Press up/down arrow key to bring “Calibration Functions".
11. Press “Enter" (Red) key.
12. Password entry field will be displayed.
13. Enter 07734 and press “Enter"
14. Now press up/down arrow key to bring “CW: Weight Check".
15. Press “Enter" key.
16. This program will start running. When this program stops, the KOR Value to be noted and entered in Parameter D02. Now press “Enter" key to accept the result.
17. Enter the corrected value in Parameter B04.
18. To enter the corrected value in Parameter B04.
19. Press Function Distributor key on Intecont Plus.
20. Press up/down arrow key to bring
“Programming"
21. Press “Enter" key.
22. Now press up/down arrow key to bring “Enter Parameter"
23. Press “Enter" key.
24. Password entry field will be displayed.
25. Enter 07734 and press “Enter" key.
26. Now press up/down arrow key to bring “Block B".
27. Press “Enter" key.
28. Now press up/down arrow key to bring Parameter “B04"
29. Press “Enter" key.
30. Press green button,--------will be displayed in Intecont plus display.
31. Now enter the Calculated value in this and press “Enter" key.
32. Press Escape key 2 times to come to home display.




TARE CALIBRATION (ZERO)

01. Stop the Mill.
02. Change mode selector switch of Weighing Panel to mode-2 (Panel mode)
03. Press Function Distributor key on Intecont Plus Unit in panel in home display.
04. Press up/down arrow key to bring “Start Keyboard mode"
05. Symbol will come in upper left hand corner of Intecont Plus display.
06. Press green button, -------t/h will be displayed in Intecont Plus display.
07. Give 100% set point. E.g. for clinker, give 65t/h set point. That means, press 65 and then “Enter"(Red) key.
08. Now give start command from Intecont Plus by pressing Start key from the Intecont Plus keyboard.
09. Press Function Distributor key on Intecont Plus.
10. Press up/down arrow key to bring “Calibration Functions".
11. Press “Enter" (Red) key.
12. Password entry field will be displayed.
13. Enter 07734 and press “Enter"
14. Now press up/down arrow key to bring “TW:Tare".
15. Press “Enter" key.
16. This program will start running. When this program stops. Press “Enter" key to accept the result.



SPEED CALIBRATION.

01. Stop the Mill.
02. Change mode selector switch of Weighing Panel to mode-2 (Panel mode)
03. Press Function Distributor key on Intecont Plus Unit in panel in home display.
04. Press up/down arrow key to bring “Start Keyboard mode" Symbol will come in upper left hand corner of Intecont Plus display.
05. Press green button, -------t/h will be displayed in Intecont Plus display.
06. Give 100% set point. E.g. for clinker, give 65t/h set point. That means, press 65 and then “Enter"(Red) key.
07. Now give start command from Intecont Plus by pressing Start key from the Intecont Plus keyboard.
08. Press Function Distributor key on Intecont Plus.
09. Press up/down arrow key to bring “Calibration Functions".
10. Press “Enter" (Red) key.
11. Password entry field will be displayed.
12. Enter 07734 and press “Enter"
13. Now press up/down arrow key to bring “LB: Imp/Belt".
14. Press “Enter" key.
15. This program will start running. When this program stops. Press “Enter" key to accept the result.
16. Now mark on a belt and take time for 01 belt revolution by the help of a Stop Watch.
17. Calculate the speed difference and Correction value for B04 Parameter as follow:-

                     Stop Watch Value (Sec)
B04(New)=---------------------------------------×B04(Old)
                    Time in data Sheet (C02)

18. Enter the corrected value in Parameter B04.
19. To enter the corrected value in Parameter B04, Press Function Distributor key on Intecont Plus.
20. Press up/down arrow key to bring
“Programming"
21. Press “Enter" key.
22. Now press up/down arrow key to bring “Enter Parameter"
23. Press “Enter" key, Password entry field will be displayed.
24. Enter 07734 and press “Enter" key.
25. Now press up/down arrow key to bring “Block B".
26. Press “Enter" key.
27. Now press up/down arrow key to bring Parameter “B04"
28. Press “Enter" key.
29. Press green button,--------will be displayed in Intecont plus display.
30. Now enter the Calculated value in this and press “Enter"
31. Press Escape key 2 times to come to home display.
32. Wait for 2-3 minutes.
33. Press Function Distributor key on Intecont plus.
34. Press up/down arrow key to bring “ Calibration Function"
35. Press “Enter" key.
36. Now press up/down arrow key to bring “LB: Imp/Belt"
37. Press “Enter" key.
38. This program will start running. When this program stops. Press “Enter" key to accept the result.

সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০১৫

যশোর

সকল জেলার উর্ধ্বে, যশোর।

★বাংলাদেশের সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল জেলা যশোর। ★বাংলাদেশের একমাত্র বিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যশোর। ★বাংলাদেশী সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোর এর একমাত্র ট্রেনিং সেন্টার আমাদের যশোরে। ★বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর এবং মেইন বর্ডার যশোর। ★বাংলাদেশের সর্বপ্রথম স্বাধীন জেলা যশোর। ★বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বিভক্ত জেলা যশোর। ★বাংলাদেশের মধ্যে যশোরের লোকজনের মন সবচেয়ে উদর। ★বাংলাদেশের সবচেয়ে উচুঁ জেলা যশোর। ★এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিলাসবহুল সিনেমা হল যশোরে। ★মাইকেল মধুসূদন দত্তের মতো বিশ্বনন্দিত কবির জন্ম যশোর।★কবি প্রমথ চৌধুরীর জন্ম যশোরে! ★সুরের জাদুকর, সুরকার প্রনব ঘোষ এর জন্ম ও যশোর। ★দক্ষিণ বঙ্গের সর্ববৃহৎ মেলা বসে যশোরের মাটিতে। ★বাংলাদেশে বিরল প্রজাতির কালো মুখ হনুমান ও যশোরের মাটিতে বাস করে সবচেয়ে বেশি। ★খেজুরের রস এবং চিটাগুড় এর জন্য যশোরি একমাত্র প্রসিদ্ধ স্থান। ★যশোরে রয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ থানা। ★যশোর কে ছাড়া এ দেশে ভালোবাসা দিবস কল্পনা করা যায় না, কারণ যশোর হচ্ছে বাংলাদেশের ফুলের রাজধানী। ★কালোজাম মিষ্টার উতপত্তি আমাদের যশোরের জমতলায়। 

লেখাঃ আবু রুবাইয়া। 
সাহায্যেঃ অশান্ত ছেলেবেলা।

রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫

বাংলার এই দামাল শিশু সৈনিক।

বাংলার এই দামাল শিশু সৈনিক।

সুন্দর এই পৃথিবীর ভয়ংকর, কালো, কঠিন বাস্তবতার কাছে হার মানতে রাজি না বাংলার এই দামাল শিশু সৈনিক। তার সঙ্গে এই শিশুশ্রমের বিষয় কথা বলতে গেলে, জীবন যুদ্ধে অপরাজিত সৈনিকের মতো বলে ওঠে। “মা” মারা গেছে অনেক দিন আগে, বাবা বেঁচে থেকেও বাবা নেই। তাই ছোট্ট বোন, “সোনিয়া” কে নিয়ে জীবন যুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি আমি “রুহুল” একা।

লেখাঃ আবু রুবাইয়া। 
প্রকাশ্যেঃ ®-অশান্ত ছেলেবেলা।