মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫

ধর্ষিত সমাজি সৃষ্টি করে বন্যার মতো মেয়ে কে। (গল্প নয় সত্য)


গ্রামের আর পাঁচটি মেয়ের মতো বন্যা ও (আমার প্রিয় নাম) নিয়মিত স্কুলে যেতেন। তাঁরও স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শিখে স্বামীর ঘরে যাবেন, কোলজুড়ে আসবে স্নেহের দুলালদুলালী। তাঁর বাবা-মায়েরও নিশ্চয়ই একই স্বপ্ন ছিল। এভাবেই কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা রাখলেন খুলনার....... এক স্বচ্ছল কৃষক পরিবারের কন্যা বন্যা।

[পাঠক সামাজিক ও পেশাগত দায়বদ্ধতার কারণে এবং বন্যা ও তাঁর পরিবারের প্রতি সম্মান জানাতেই তার পরিচয় গোপণ করা হলো।]

পাশের গ্রামের স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বন্যা র প্রতিদিন যাওয়া-আসা মিলিয়ে পাঁচ কিলোমটার পথ মাড়াতে হয়। সঙ্গী সহপাঠী একই পাড়ার মেয়ে স্বপ্না (এটিও ছদ্মনাম)। সকাল ৮টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুলে পৌছানো এবং বিকাল ৫টায় বাড়ি ফেরা এভাবেই রুটিনে পরিণত হয়েছিল বন্যা ও স্বপ্নার দিনলিপি।

স্কুলে যাতায়াতের পথে স্লিম ফিগারের সুন্দরী বন্যার দিকে কুনজর পড়ে পাশের গ্রামের লিটনের (যৌক্তিক কারণে এখানেও প্রকৃত নাম ব্যবহার করা হলো না)। স্কুলের একেবারে কাছেই লিটনদের বাড়ি এবং বাড়ির পাশের একমাত্র পথ মাড়িয়েই পৌছাতে হয় স্কুলটিতে। বিকল্প পথে অতিরিক্ত এক কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়।

যাতায়াতের পথে নিয়মিত ইভটিজিংয়ের শিকার হতে থাকেন বন্য। সঙ্গী স্বপ্নাও নিরূপায়। তিনিও যুবতী। শান্ত ও বুদ্ধিমতি বন্যা কোনো প্রতিবাদ না করে মুখ বুজে সব সহ্য করে রোজকার রুটিন মেনে স্কুলে যাতায়াত করতে থাকেন। তবে, ইতিমধ্যে বিষয়টি বাড়িতে বাবা-মাকে জানিয়েছেন তিনি। তাঁরাও মেয়েকে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, দু’বছরের মধ্যে এসএসসি পাশ করলে শহরের কোনো কলেজে ভর্তি করা হবে তোমাকে। তখন আর এসব ঝামেলা থাকবে না।

কিন্তু বখাটে-অশিক্ষিত যুবক লিটনের উত্যক্তের মাত্রা যখন সীমা ছাড়িয়ে গেলো তখন বাধ্য হয়েই বন্যা কে নিয়ে তাঁর বাবা বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানালেন। এক ছাত্রীর মানসম্মানের কথা ভেবে প্রধান শিক্ষক নিজেই গোপনে ছেলেটির বাবা, চাচা ও খালুকে অবহিত করেন। এর পর অভিভাবকরা লিটনকে বকা-ঝকা করায় মাস দুয়েক শান্ত থাকে সে। বন্যা , স্কুলের শিক্ষকমণ্ডলী ও তাঁর অভিভাবকরাও স্বস্তি পান। তাঁদের মধ্যে ধারণা জন্মে যে, লিটন হয়তো নিজের ভুল বুঝতে পেরে ওই পথ থেকে সরে এসেছে।

কিন্তু প্রবাদ আছে যে, ‌চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনী। কিছুদিন দৃশ্যত নিরব ও নিষ্ক্রিয় থাকলেও ভেতরে ভেতরে হিংস্র হয়ে ওঠে সে। বন্যা র চরম সর্বনাশ করে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রহর গুণতে থাকে প্রতিহিংসাপরায়ণ লিটন। অবশেষে কালোমেঘে ঢাকা প্রবলবর্ষণরত এক বিকালে পৈশাচিক লালসা পূরণের সুযোগ পায় সে। অভিশপ্ততার কালিমায় ছেয়ে যায় বন্যা র জীবন।

কিন্তু কীভাবে পূরণ হলো লিটনের জৈবিক লালসা ও মানবরূপী দানবটির ভেতরের পৈশাচিকতা?
তথ্যসূত্র: জীবনের দামে কেনা জীবিকা?
লেখাঃ আবু রুবাইয়া।
সত্যের পথে অটুট। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for comments